আমরা পরের অধ্যায়ে শক্তি সম্পর্কে জানার সময় পতিশক্তির বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বুঝতে পারব কিন্তু “সংঘর্ষ” পড়ার সময় এর মাঝে জেনে গেছি যে গতিশক্তিকে হিসেবে প্রকাশ করতে হয়। ভ্রমণ সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শক্তির মাঝে বেগের বর্গ রয়েছে, যার অর্থ বেগ দ্বিগুণ করা হলে শক্তি চার গুণ বেড়ে যায়। যখন দুটো গাড়ির মাঝে সংঘর্ষ হয় তখন এই শক্তিটির কারণেই গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আরোহীরা আঘাত পায়। কাজেই দুর্ঘটনার সময় ক্ষতি কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে গতি কম রাখা। আমাদের দেশের বেশিরভাগ দুর্ঘটনা হয় গাড়ির বেগ বেশি রাখার কারণে। তখন গাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয় এবং দুর্ঘটনা ঘটার সময় সেখানে অনেক শক্তি ব্যয় হয়।
ধরা যাক পথে একটি অনেক ভারী পাথর বোঝাই ট্রাকের () সাথে একই বেগে আসা ছোট একটা গাড়ির () মুখোমুখি সংঘর্ষ হন। কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে?
যেহেতু মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে তাই ছোট গাড়ির বেল ট্রাকের বেগের বিপরীত।
অর্থাৎ ট্রাকের বেগ হলে গাড়ির বেগ – u
যেহেতু ছোট গাড়ির ভর ট্রাকের ভর এর তুলনায় অনেক কম সেটাকে শূন্য ধরে নিলে খুব বেশি ভুল হবে না কিন্তু আমাদের হিসাবটি খুব সহজ হবে। (তুমি ইচ্ছা করলে সত্যিকারের বাস-ট্রাক এবং ছোট গাড়ির ভর নিয়ে হিসাবটি করে দেখতে পারো) 12 কে শূন্য ধরে আমরা দেখি সংঘর্ষের পর ট্রাকের বেগ
ফলাফলটি খুবই ভীতিজনক। সংঘর্ষের পর ট্রাকটি একই বেগে যেতে থাকবে, অর্থাৎ সংঘর্ষের ভয়াবহতা অনুভব করবে না। ছোট গাড়িটির বেগ –u থেকে পরিবর্তিত হয়ে 3u হয়ে যাবে যার অর্থ বেগের পরিবর্তন 3u - (-u) = 4u , ছোট গাড়ির বেগের দিক পরিবর্তিত হয়ে উল্টোদিকে চার গুণ বেগে ছিটকে যাবে। এই প্রক্রিয়ার ছোট গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আরোহীদের প্রাণ হারানো হবে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
কাজেই আমাদের পথে ভারী ট্রাক এবং ভারী বাস খুব সতর্ক হয়ে চালাতে হবে, কারণ দুর্ঘটনায় তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও তাদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ছোট গাড়ি অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরও দেখুন...